শিক্ষা

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ম শ্রেনী তৃতীয় অধ্যায়

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ১ :

সাজ্জাদ ও মীরার সংসারে নতুন শিশুর আগমন ঘটেছে। শিশুটি ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে এবং পরিবারের সবার কাছ থেকেই কিছু না কিছু শিখছে।
প্রতিটি শিশুরই এ শিখন প্রক্রিয়া জন্ম থেকেই শুরু হয় আর মৃত্যুনঅবধি চলতে থাকে।
ক. সুনাগরিকের গুণাবলি কয়টি?
খ. পরিবর্তনশীল পরিবার বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে কোন বিষয়টির প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে?
ঘ. উক্ত প্রক্রিয়াটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম কোনটি এবং কেন? যুক্তিসহ লেখ।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন  সমাধান:

ক. সুনাগরিকের গুণাবলি তিনটি
খ. পরিবর্তনশীল পরিবার বলতে মূলত ধরন পরিবর্তন হয়ে যে পরিবার সৃষ্টি হয় সে পরিবারকে বোঝায়।
যেমন- গ্রামীণ যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবারের সৃষ্টি হয়।
অধিক জনসংখ্যা, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, বিবাহ বিচ্ছেদ, নারীর কর্মসংস্থান প্রভৃতি কারণে পরিবারের ধরনে পরিবর্তন আসছে।
গ. উদ্দীপকে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।
শিশু পরিবার তথা সমাজে যেভাবে সামাজিক হয়ে গড়ে ওঠে তাকে সামাজিকীকরণ বলা হয়। জন্মের পর শিশু পরিবারে বেড়ে ওঠে।
এই বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য ও পিতামাতার কাছ থেকে সে যা কিছু শিখে তার পুরো প্রক্রিয়াই হলো শিশুর সামাজিকীকরণ।
এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত চলতে থাকে। উদ্দীপকে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার প্রতিই ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।
উদ্দীপকের সাজ্জাদ ও মীরার শিশু সন্তান ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে এবং পরিবারের সদস্য ও পিতামাতার কাছ থেকে বিভিন্ন কিছু শিখছে।
এই শিখন প্রক্রিয়া আমৃত্যু চলবে এবং এর মধ্য দিয়েই ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হবে।

 

তাই বলা যায়,উদ্দীপকে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়াটিই প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ. উক্ত প্রক্রিয়াটির অর্থাৎ সামাজিকীকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো পরিবার।
শিশু পরিবারে জন্ম নেয় এবং বেড়ে ওঠে। এই বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য ও পিতা-মাতার কাছ থেকে সে যা কিছু যেভাবে শিখে সেই শিখন প্রক্রিয়াই হলো সামাজিকীকরণ।
উদ্দীপকে সাজ্জাদ ও মীরার সংসারে নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। এ পরিবারে শিশুটি যে প্রক্রিয়ায় সামাজিক হয়ে উঠবে তাই সামাজিকীকরণ।

 

একক পরিবারের মধ্যেই শিশুর সামাজিক নীতিবোধ, নাগরিক চেতনা, সবার সহযোগিতা, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ, আত্মত্যাগ ও ভালোবাসা জন্মে।
এভাবে পরিবার শিশুর সামাজিকীকরণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, উদ্দীপকে নির্দেশিত সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে পরিবারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ২ :

আয়েশা ছোটবেলা থেকে আচার-ব্যবহার, কথাবার্তা, চলাফেরা প্রভৃতি তার পরিবার, খেলার সাথী ও বিদ্যালয় থেকে শিখেছে।
এভাবে সে শিশুকাল থেকেই ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়েছে।
ক. শিশুরা ধর্মীয় শিক্ষা কোথায় পায়?
খ. পিতা-মাতার আচরণ কীভাবে শিশুর ওপর প্রভাব ফেলে?
গ. আয়েশার ব্যক্তিত্বপূর্ণ মানুষে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে তার পরিবারের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে উদ্দীপকে উল্লিখিত মাধ্যমগুলোর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন সমাধান   ৭ ম শ্রেনী ৩য় অধ্যায়ঃ

: ক. শিশুরা ধর্মীয় শিক্ষা মূলত পরিবারেই পায়।
খ. পিতা-মাতার আচরণ শিশুর সামাজিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব শিশুরা অনুকরণপ্রিয় হয়।
তাই তাদের আচার-ব্যবহার, বিবেক বুদ্ধি তাদের পিতা-মাতার আচরণ ও বিচার-বুদ্ধির ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে।
যে কারণে শিশুর ওপর পিতা-মাতার আচরণ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
গ. আয়েশার ব্যক্তিত্বপূর্ণ মানুষে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে তার পরিবারের ভূমিকা ব্যাপক।
একটি শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় তার পরিবারের গুরুত্ব অনেক।
পরিবারই একটি শিশুকে পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের সামাজিক মানুষে পরিণত হওয়ার প্রাথমিক জ্ঞান দেয়।
উদ্দীপকে আয়েশা ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে তার পরিবার ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
একটি শিশু তার পিতা-মাতা, পরিবারের সদস্যদের আচার-আচরণ, মূল্যবোধ, বিচার-বিবেচনা প্রভৃতির মাধ্যমে প্রভাবিত হয়।
এগুলো তাকে সমাজের সক্রিয় সদস্যে পরিণত হতে
সহায়তা করে। এছাড়া একটি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের কাছে পেয়ে থাকে।
এ শিক্ষাই তার শিক্ষাজীবনের মূল ভিত্তি। আবার ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মূল্যবোধ গঠনে সহায়তা করে। শিশুরা ধর্মীয় শিক্ষা সাধারণত পরিবারের কাছ থেকেই পেয়ে থাকে।
শিশুর মানবিক ও সামাজিক বিকাশে এ শিক্ষার গুরুত্ব অনেক। তাই বলা যায়, আয়েশাকে ব্যক্তিত্বপূর্ণ মানুষে পরিণত করতে তার পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম।
ঘ. একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে উদ্দীপকে উল্লিখিত মাধ্যমগুলোর অর্থাৎ পরিবার, খেলার সাথী ও বিদ্যালয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
একটি শিশুর পূর্ণাঙ্গ সামাজিক মানুষে পরিণত হওয়ার পেছনে অনেকগুলো সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করে।

৭ শ্রেনী সমাজ ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন

এদের মধ্যে পরিবার, বিদ্যালয়, ধর্ম, চিত্তবিনোদন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। উদ্দীপকে আয়েশা আচার আচরণ, কথাবার্তা, চলাফেরা প্রভৃতি শিক্ষা পরিবার, খেলার সাথী ও বিদ্যালয় থেকে পেয়েছে।
শিশুর সামাজিকীকরণে তার পরিবারের ভূমিকা ব্যাপক। পরিবার শিশুর সামাজিক আচার-ব্যবহার, মূল্যবোধ রীতি-নীতির প্রাথমিক ধারণা প্রদান
করে।
এছাড়াও শিশু প্রাথমিক শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষা সাধারণত তার পরিবারের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। এ শিক্ষাগুলো তার ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক।
এছাড়া সে খেলার সাথীর কাছ থেকে সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধসহ বিভিন্ন গুণ অর্জন করে।
অন্যদিকে বিদ্যালয় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা করে শিশুকে পূর্ণাঙ্গ সামাজিক মানুষ হতে সহায়তা করে।
উপরের আলোচনা থেকে তাই বলা যায় যে, শিশুর সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে উদ্দীপকের মাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৩  :

নোবেল ও তানিয়া ব্যাংকে চাকরি করেন। বিয়ের পর থেকে তারা একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই দ্বন্দ্ব হয়।
ক. কাদের নিয়ে একক পরিবার গঠিত হয়?
খ. সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া’— ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে লাবনীর আচরণের জন্য সামাজিকীকরণের কোন বাহনটি কার্যকর হয়নি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর লাবনীর বাবা-মা লাবনীকে সময় দিলে তার ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশ ঘটবে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন সমাধান 

 

:ক. স্বামী-স্ত্রী ও অবিবাহিত সন্তান নিয়ে একক পরিবার গঠিত হয়।
খ. সামাজিকীকরণ জীবনব্যাপী চলতে থাকে।
শিশু একটি পরিবারে তথা সমাজে যেভাবে সামাজিক হয়ে গড়ে ওঠে তাকে সামাজিকীকরণ বলা হয়।
এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা জন্ম থেকে
মৃত্যু পর্যন্ত চলতে থাকে। এ কারণে সামাজিকীকরণকে জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে লাবনীর আচরণের জন্য পরিবার বাহনটি কার্যকর হয়নি।
পরিবার সামাজিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। শিশুর জীবনের ভালো ও খারাপ অভ্যাস পরিবারের সামাজিকীকরণের ফল।
বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে যেসব পরিবারের পিতা-মাতা উভয়েই চাকুরিজীবী, সেসব পরিবারে শিশুকে গৃহভৃত্য বা আত্মীয়-স্বজনের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।
এসব পরিবারের পিতা-মাতা শিশুদের খাদ্য, শিক্ষা, খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না।
ফলে শিশুর সুষ্ঠু সামাজিকীকরণ ঘটে না। উদ্দীপকে বর্ণিত লাবনীর ক্ষেত্রেও এ বিষয়টির প্রতিফলন লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকে বর্ণিত নোবেল ও তানিয়া দম্পতি ব্যাংকার। তাই তাদের একমাত্র মেয়ে লাবনী গৃহপরিচারিকার সাথে সময় কাটায়।
কিছুদিন পর লাবনীর কথা ও আচরণ অনেকটা গৃহপরিচারিকার মতো হয়ে ওঠে।
লাবনীর পিতা-মাতা যদি লাবনীকে সময় দিতে পারতেন তাহলে তার আচরণে গৃহপরিচারিকার প্রভাব পড়ত না।
তাই বলা যায়, লাবনীর আচরণের জন্য সামাজিকীকরণের পরিবার বাহনটি কার্যকর হয়নি। 
ঘ. লাবনীর বাবা-মা লাবনীকে সময় দিলে তার ব্যক্তিত্বেও পূর্ণ বিকাশ ঘটবে বলে আমি মনে করি
শিশুর সামাজিকীকরণে পরিবারের ভূমিকা ব্যাপক।

 

সময়ে এর প্রভাব তাদের আচরণে লক্ষ করা যায়। শিশুর সবচেয়ে কাছের মানুষ হলেন তাদের বাবা-মা। বাবা-মা শিশুর খাদ্যভ্যাস, কথাবার্তা, আচার-আচরণ যেভাবে গড়ে তুলবেন তাদের আচরণে সেটি প্রভাব ফেলবে।
মোটকথা, শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।
উদ্দীপকে বর্ণিত লাবনীর বাবা-মা উভয়েই চাকুরিজীবী হওয়ার কারণে তারা লাবনীকে সময় দিতে পারেন না।
লাবনী গৃহপরিচারিকার সাথে সময় কাটায়। যে কারণে তার আচরণ ও কথায় গৃহপরিচারিকার আচরণের প্রভাব দেখা যায়।
এক্ষেত্রে লাবনীর ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশের
জন্য প্রয়োজন বাবা-মায়ের সঙ্গ। কেননা পরিবার সামাজিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
উপরের আলোচনার ভিত্তিতে তাই বলা যায়, লাবনীর বাবা-মা লাবনীকে সময় দিলে তার ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশ ঘটবে।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *