শিক্ষা

বাংলাদেশের অর্থনীতি ৭ম শ্রেণী সমাজ ৪র্থ অধ্যায়  

বাংলাদেশের অর্থনীতি

৭ম শ্রেনী ৪র্থ অধ্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সৃজনশীল প্রশ্ন ১ :

দুর্জয় বাবার খামারের কাজে সহায়তা করে। খামারে কাজ না থাকলে খালে-বিলে মাছ ধরে অর্থ উপার্জন করে।
সে সংসারের আর্থিক উন্নয়নে বাবার পাশাপাশি কর্মে নিয়োজিত থেকে ভূমিকা রাখছে।
ক. পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পাটকল কোনটি?
খ. অর্থনীতির প্রথাগত খাত বলতে কী বোঝায়?
গ. দুর্জয় কোন ধরনের অর্থনৈতিক খাতে শ্রম দিচ্ছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দুর্জয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে-যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

৭ম শ্রেনী ৪র্থ অধ্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সৃজনশীল প্রশ্ন ১ :সমাধান

 

খ. অর্থনীতির প্রথাগত খাত বলতে অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে বোঝায়।
যেসব কাজের জন্য পূর্ব মজুরি নির্ধারিত নয়। করের আওতায় আনাও কঠিন এবং যেসব অর্থনৈতিক কার্যক্রম সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত নয়।
সংক্ষেপে অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রম বলতে সেগুলোকেই বোঝায়। যেমন নিজের জমি, দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ, গৃহস্থালি কর্ম, হকারি, দিন মজুরি প্রভৃতি।
অতীতকালে থেকে চলে আসছে বলে অনেকে এসব
কাজকে অর্থনীতির প্রথাগত খাত বলে থাকেন।
গ. দুর্জয় অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে শ্রম দিচ্ছে।
সাধারণত যেসব অর্থনৈতিক কাজের জন্য মজুরি নির্ধারিত নেই।
করের আওতায় আনা কঠিন এবং যা সরকার কর্তৃক  নিয়ন্ত্রিত হয় না তাকে অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম বলে।
যেমন-নিজের জমি, দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করা, গৃহস্থালি কর্ম, হকারি, দিন মজুরি ইত্যাদি।
অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের বেশিরভাগ
অর্থনৈতিক কার্যক্রম অনানুষ্ঠানিক খাতের মাধ্যমে হয়।
উদ্দীপকে দুর্জয় বাবার খামারের কাজে সহায়তা করে। খামারে কাজ না থাকলে খালে-বিলে মাছ ধরে অর্থ উপার্জন করে।
তাই বলা যায় যে, দূর্জয়ের কার্যাবলি অর্থনীতির অনানুষ্ঠানিক খাতের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ. দুর্জয় তার কাজের মাধ্যমে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বিশ্বের অন্য যে কোনো উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও অনানুষ্ঠানিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
গ্রামের একজন খামারি ও তার পরিবারের সদস্যরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খামারে কাজ করেন।

 

শহরাঞ্চলে বসবাসকারী স্বল্প ও মাঝারি আয়ের অনেক মানুষও অনানুষ্ঠানিকভাবে অর্থনৈতিক কাজে নিয়োজিত থেকে অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে।
উদ্দীপকে দুর্জয় বাবার খামারে কাজের পাশাপাশি খালে-বিলে মাছ ধরে সংসারের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
তার এ কাজ অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এটি দেশের অর্থনীতিতে উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রধান খাতের অংশ হিসেবে দুর্জয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

৭ম শ্রেনী ৪র্থ অধ্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সৃজনশীল প্রশ্ন ২ :

ছক-১ : হকারি, দিনমজুরের কাজ, নিজ জমিতে কাজ;

ছক-২ : সিল্ক শিল্প, সিরামিক শিল্প, হিমাগার।
ক. কোন ধরনের শিল্পকে ক্ষুদ্র শিল্প ধরা হয়?
খ. বৈদেশিক বাণিজ্য বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. ছক-১ এ উল্লিখিত কাজ কোন ধরনের অর্থনৈতিক কাজের অন্তর্ভুক্ত?
ঘ. ছক-২ এ উল্লিখিত শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
সমাধান : ক. দেড় কোটি টাকার কম মূলধন খাটে যে কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে তাকে ক্ষুদ্র শিল্প বলা হয়।
খ. বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি ও বিদেশে পণ্য রপ্তানি করার নামই বৈদেশিক বাণিজ্য।
সাধারণত কোনো দেশ তার চাহিদার সমস্ত জিনিস নিজেরা উৎপাদন করতে পারেন না।
অন্য দেশ থেকে কিছু কিছু জিনিস তাকে আমদানি করতে হয়। একইভাবে দেশের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত পণ্যের একটা অংশ বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
এভাবে বিদেশের সাথে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠে তাই বৈদপশিক বাণিজ্য।
গ. ছক-১ এ উল্লিখিত কাজ শহরাঞ্চলের অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কাজের অন্তর্ভুক্ত।
যে কোনো অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কাজ এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

 

উদ্দীপকের ছক-১ এর কাজগুলো হলো হকারি, দিনমজুরের কাজ, নিজ জমিতে কাজ।
এ কাজগুলো মূলত শহরাঞ্চলের অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কাজ।
কেননা এ ধরনের কাজের পূর্ব নির্ধারিত কোনো মজুরি নেই এবং এগুলোকে করের আওতায় আনা কঠিন। আর এ কাজগুলো সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিতও নয়।
ঘ. উদ্দীপক-২ এ উল্লিখিত মাঝারি শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে- এ উক্তিটি যথার্থ।
যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে দেড় কোটি টাকার অধিক মূলধন খাটে সেগুলোকে মাঝারি শিল্প বলা হয়।

 

ছক- ২ এ নির্দেশিত শিল্পগুলো মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মাঝারি শিল্পের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ ধরনের শিল্পের মূলধন কম হলেও চাহিদা বেশি থাকে। তাই অপেক্ষাকৃত কম মূলধন পুঁজি করেও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব।
এছাড়া বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে বৃহৎ শিল্প স্থাপন করা কষ্টসাধ্য এবং এর ভরণপোষণও প্রায় অসম্ভব।
তাই মাঝারি শিল্পগুলোই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে পারে।
অতএব বলা যায় যে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মাঝারি শিল্পের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৭ম শ্রেনী ৪র্থ অধ্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ :

জনাব তপন সাহেব একজন কারখানা মালিক। তিনি সাভারে ৩০ কোটি টাকা মূল্যের একটি কারখানা স্থাপন করলেন।
উক্ত কারখানার লভ্যাংশ দিয়ে তিনি তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানা গড়ে তুললেন।

এবং সেখান থেকে তৈরি পোশাক ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি শুরু করলেন।

ক. SAFTA এর পূর্ণরূপ ইংরেজিতে লিখ।..
খ. ক্ষুদ্র শিল্প কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. মি. তপনের কারখানাটি কোন ধরনের এবং এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে”— উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

৭ম শ্রেনী ৪র্থ অধ্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ সমাধান :

ক. SAFTA এর পূর্ণরূপ South Asian Free Trade Area.
খ. দেড় কোটি টাকার কম মূলধন খাটে যে কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে তাকে ক্ষুদ্র শিল্প ধরা হয়।
সাধারণত চাল কল, ছোট ছোট জুতা বা প্লাস্টিক কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প প্রভৃতি ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে এ ধরনের শিল্পের গুরুত্ব অনেক।
গ. মি. তপনের কারখানাটি বা বৃহৎ শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম।
যে সকল শিল্পে প্রচুর মূলধন ও লোকবলের প্রয়োজন হয় এবং উৎপাদন ও অনেক হয় সেগুলোকে বৃহৎ শিল্প বলা হয়।
এ ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রচুর দক্ষ শ্রমিক ও কারিগর, প্রকৌশলী, বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ ব্যবস্থাপকের প্রয়োজন হয়।
এসব শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতাও অনেক বেশি। ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত সামগ্রীর একটা বড় অংশ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হয়।
ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। এ শিল্পগুলো দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে।
উদ্দীপকের মি. তপন ৩০ কোটি টাকা মূল্যের একটি কারখানা স্থাপন করেন।
উক্ত কারখানার লভ্যাংশ দিয়ে তিনি তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানা তৈরি করেন।
এ থেকে বোঝা যায় তার প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বেশি হয়। তাই মি. তপনের কারখানা বৃহৎ শিল্পের অন্তর্ভুক্ত

বাংলাদেশের অর্থনীতি

ঘ “বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার দিকে।এগিয়ে যাচ্ছে”- উক্তিটি যথার্থ।
কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশে দিন দিন বিভিন্ন শিল্পের অবদান বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ সব শিল্প যেমন উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে, তেমনি অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে।
উদ্দীপকের জনাব তপন সাহেবের কারখানার ন্যায় অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে বিশেষ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশ একটি শিল্প সম্ভাবনাময় দেশ। এখানে মজুরি কম আর শ্রমিক বেশি হওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এদেশে শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগে আগ্রহী হয়।
গার্মেন্টস শিল্প এর একটি বড় উদাহরণ। বিনিয়োগে বিদেশিদের উৎসাহী করতে সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন বৃদ্ধি করছে।
ফলে দেশে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগে নানা ধরনের কারখানা গড়ে উঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এ সকল শিল্প উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি ও এতে কর্মরত জনগণের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফলে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটছে।
পরিবেশেষে বলা যায় যে, কৃষিভিত্তিক থেকে শিল্পসমৃদ্ধ অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *